এই বইয়ের সাতটি প্রবন্ধের প্রত্যেকটির ভেতরই অনেকগুলো গল্প আছে। গল্পগুলো কল্পিত নয়, বাস্তবিক। অর্থাৎ প্রতিটি গল্পের পেছনেই ইতিহাস রয়েছে; ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, অনেক ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ইতিহাস।
সাত প্রবন্ধের একটি হচ্ছে ‘উন্নতি, উত্থান ও অভ্যুত্থান’। সেটি দিয়েই বইয়ের নামকরণ। এই প্রবন্ধটির বক্তব্য বইয়ের মূল কথাগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে। উন্নয়ন ঘটেছে; উত্থানও ঘটছে; কিন্তু সেটা কাদের উন্নতি, কেমন উন্নতি, কতটা উন্নতি -বড় প্রশ্ন কিন্তু সেটাই। আমাদের উন্নয়ন পুঁজিবাদী ধরনের, উন্নতিও সুবিধাপ্রাপ্তদেরই। ফ্যাসিবাদ হচ্ছে পুঁজিবাদের শেষ পরিণতি; ফ্যাসিবাদী শাসকেরা উন্নয়নকে গণতন্ত্রের বিপরীতে দাঁড় করাতে চায়; যেমনটি চেয়েছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনে তিনি জিতেছেন। আমাদের দেশেও একটি ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটলো প্রায় একই সময়ে, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে; সেই সরকারও ভেবেছিল উন্নয়ন দেখিয়ে গণতন্ত্রের দাবীকে দাবিয়ে রাখবে। তবে পারে নি। কিন্তু ফ্যাসিবাদ তো দু-চারজন শাসকের ব্যাপার নয়; এ হচ্ছে সারা বিশ্বের সমস্যা।
নির্বাচন দিয়ে তাকে যে বিদায় করা যাবে না সেটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কিন্তু অভ্যুত্থান ঘটলেই কি ফ্যাসিবাদের পতন ঘটবে? না, ঘটবে না; ফ্যাসিবাদকে বিদায় করার জন্য অভ্যুত্থানকে হতে হবে সমাজবিপ্লবী; এক কথায় ব্যক্তিমালিকানার জায়গাতে সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠাকামী। সেই কথাগুলোই বলা হয়েছে ২০২৩ সালের মার্চ এবং ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ভেতরে লেখা প্রবন্ধ কয়টিতে। এই বইতে যুক্তির সঙ্গে মিলেছে সংবেদনশীলতা।